টাইমসনিউজ ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি, বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসকন পরিস্থিতি, কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সমস্যা- এসব বিষয় নিয়ে দলের উদ্বেগের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাতে এসেছিলাম। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি যারা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাদের প্রতিহত করতে আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
দেশের জনগণের মধ্যে বিভাজন এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘চলমান সংকট নিরসনে এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি যারা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাদের প্রতিহত করতে আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি, বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসকন পরিস্থিতি, কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সমস্যা- এসব বিষয় নিয়ে দলের উদ্বেগের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর জন্যই আমরা এসেছিলাম। আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে দ্রুত বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি যে এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। কারণ আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যারা এর স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
‘সামগ্রিকভাবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য তৈরির কথা বলেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে বলেছি। আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কবে হবে সে বিষয়ে রোডম্যাপ দিতে বলেছি। জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত অধ্যাদেশ দিয়ে বাতিল করতে বলেছি। বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যেন নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে না যায়, সেটা আমরা বলেছি।
‘ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ভুয়া ভোটের মাধ্যমে হওয়া সব ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করতে বলেছি। সেসঙ্গে ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালে নির্বাচনের সময় যারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনার ছিলেন তাদেরসহ ভুয়া ও পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা বলেছি টিসিবির ট্রাক বৃদ্ধি করতে। কৃষিতে সার বিতরণের যে সমস্যা আছে, সেগুলো নিরসনের কথা বলেছি। এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। সে জন্য জনগণের পক্ষে যারা আছেন, তাদের নিয়ে আসার কথা বলেছি।
‘শিল্পে উৎপাদনের জন্য স্বাভাবিক অবস্থা যেন থাকে, শ্রমিকরা যাতে বেতন পান, সেটা বলেছি। প্রয়োজনে ঋণ দেয়ার কথা বলেছি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা ভেঙে দেয়া হয়েছে। যেসব ইউনিয়ন পরিষদ বহাল আছে সেগুলো ভেঙে দেয়ার কথা বলেছি। কেননা বেশিরভাগই ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জবরদস্তির নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছে। পরবর্তীতে নির্বাচনের মাধ্যমে এসব গঠনের কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার কথা বলেছি। তাছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহারের কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন।’