সজীব মোল্লা স্টাফ রিপোর্টার:-
ফরিদপুরের মধুখালীতে টানা বৃষ্টিতে মিষ্টি কুমড়া,মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পেঁপে, কলা, ধানসহ শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা চার দিনের হওয়া বৃষ্টিতে এই ক্ষতি হয়।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের কুড়ানিয়ারচর গ্রামের কৃষক মোঃ আকরাম হোসেন ধারদেনা করে এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে মরিচ ও কুমড়া চাষ করেছিলেন। প্রতিটি গাছে ফলন ছিল। বৃষ্টিতে গাছের গোরা পঁচে গাছ মারা গেছে। মরিচের সাথী ফসল হিসাবে ২০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছিলেন। সেই গাছও বৃষ্টিতে মারা যাচ্ছে। গাছে ১শ থেকে ১০টি মিষ্টি কুমড়া ধরা অবস্থায় ছিল যার ওজন প্রায় এক থেকে দের কেজিতে পরিণত হয়েছিল। সেগুলো ক্ষেতে তুলতে গিয়ে দেখেন সব পঁচে গেছে। ৪০ শতাংশ জমিতে দুই ফসলে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ১২ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছিলেন তারপর টানা বৃষ্টিতে সব মরিচ গাছ মরে গেছে মরিচ ক্ষেত পানির নীচে। বিষয়টি এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সবজিক্ষেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। নওপাড়ার এই কৃষকই শুধু নন,সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে মধুখালী পৌর এলাকা সহ কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক কৃষকের খেতের ফসল নষ্ট হয়েছে ।বুধবার উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ আব্দুর রহমান জানান, টানা বৃষ্টিতে ৩৫ শতাংশ জমির আমনের চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চারা পঁচে গেলে আবার লাগানো লাগবে। পৌরসদরের ২নং ওয়ার্ডের কুমড়া চাষী আব্দুল আলিম বলেন, বৈকন্ঠপুর মাঠের জমিতে লাগানো কুমড়া অতিবৃষ্টিতে প্রায় অর্ধেক পঁচে হয়ে গেছে। বাকিগুলোর অবস্থাও ভালো না। বড় ক্ষতিতে পরতে হবে এবার।উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী,অতিবৃষ্টিতে মধুখালী উপজেলায় ২হাজার ৪শ ২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষ করা হয়েছিল এর মধ্যে ফুলকপি ১ হেক্টর, বাঁধাকপি ০.৫, মিষ্টি কুমড়া ৬ হেক্টর,শশা ১ হেক্টর, করলা ০.৫ হেক্টর,পেঁপে ১ হেক্টর,কলা ১ হেক্টর ও অনান্য সবজি ১ হেক্টর পরিমাণ ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় প্রভাব পরেছে কাঁচা বাজারে। সকল সবজির দাম আকাশ ছোয়া। বিক্রেতারা বলছেন বৃষ্টিতে সবজির ক্ষতি হওয়ায় বাজারে সবজির আমদানি কম থাকায় দাম উর্ধমূখী। মঙ্গলবার/বুধবার মধুখালী পৌরসদরের কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৪শটাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পোটল ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুব ইলাহী বলেন,এ বছর ১টি পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নে ২হাজার ৭শ ২০হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। মরিচের মৌসুম শেষ পর্যায়ে রয়েছে যেটুকু ছিল অতিবৃষ্টির কারনে মরিচ ক্ষেত পানির নীচে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উপজেলার মেগচামী,গাজনা ইউনিয়নের আগাম শীতকালীন সবজির বেশি ক্ষতি হয়েছে।বৃষ্টিতে কম বেশি সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে দামের প্রভাব পরেছে। আবহাওয়ার উন্নতি না হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।